মোঃ ইমদাদুল হক, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:
বয়সের ভারে নূয়েপড়া ৮০ উর্দ্ধ বয়েসের ভিক্ষুক পবন বালার অশ্রুসিক্ত নয়নে করুন আর্তী “মোক একটা ঘর করি দেও বাবা”। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ নিজাম খাঁ গ্রামের পরেশ চন্দ্রের লেচু বাগানে ঝড়-বৃষ্টি আর শীতের শীতল আবহাওয়ায় ভাঙ্গা চালায় সীমাহীন কষ্টের জীবনের প্রতিটিক্ষন পার করছেন তিনি স্বামী-সন্তান হারা মেয়ে হতদরিদ্র আকালী রানী (৬৫) এর সাথে।

মা পবন বালা (৮৫) প্রকৃত আবাস ছিল উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নে। তিস্তা নদীর করাল গ্রাসে সবত বাড়ি হরিয়ে পবন বালা স্বামীসহ আশ্রয় নেয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেরী বাঁধে। সেখানে কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামী নরেশ চন্দ্র মারা যায়। ভিটা-মাটি, ঘটি-বাটি হারা পবন বালা অবশেষে আশ্রয় নেয় তারাপুর ইউনিয়নের চাচীয়া মীরগঞ্জে বসবাসরত হতদরিদ্র জামাতা বাচ্চু চন্দ্রের বাড়ীতে।
সেখানে কিছুদিন অবস্থানের পর বাধ্য হয়ে ঠাই নেয় পিতৃএলাকার পরেশ চন্দ্রের লেচু বাগানে। সেখানে তিনি জীবনের প্রায় শেষ সায়ান্নে আশ্রয় নেয় বড় মেয়ে স্বামী-সন্তান হারা আকালী রানী (৬৫)’র নিকট। কাউরে কোন নির্দিষ্ট বসত ভিটা নেই। সারাদিন অন্যের দূয়ারে দূয়ারে ঘুরে যেটুকু ভিক্ষা পায় তারই উপর জীবন নির্ভশীল হয়ে পরে। কথা হয় তাদের সাথে লেচু বাগানের জির্ণসীর্ণ বসতবাড়িতে। তারা অশ্রুসিক্ত কন্ঠে এ প্রতিবেদকের নিকট বলতে থাকেন- ‘স্বামী ৩০ বছর আগে মারা গেছে।
ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করছি। স্বামীহিন অবস্থায় থাকার স্থানটুকু নড়বড়। হামরা শুনি জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হামার মতো মানুষগুলাকে ঘর করি দিবের নাকচে। তোমরা মোর ছবি তোলেন বাহে। মোক কাইয়ো দ্যাখে না, ঘরের বেড়া নাই, ভাঙ্গা ঘরোত থাকোং, ঝরি আইলে চালার ট্যারা দিয়ে পানি পড়ে, সউগ ভিজিয়ে যায়। মোক এলাও কেউ একটা ঘর করি দিল না।
তোমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে মোর হয়া একটা খবর লেখ। চেয়ারম্যান, মেম্বরের কাছে গেইলে তারাও মোক কোন পাত্তা দেয় না, মোক একটা ঘর করি দেও বাবা। তোমরা যদি মোর এই কাহিল অবস্থার কথা কন তা হইলে হামরা শুনছি এ উপজেলার বড় বাবু খুব ভাল মানুষ। কিজানি নাম টিওনো ও উপজেলার যামরা বড় কর্তা তামরা হয়তো হামার কথাগুলে জানবে, তাদের কাছ থেকে যদি একটা ঘর পাই বাবা’।